জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি’র ৬ষ্ঠ সাধারণ সভার গঠনতান্ত্রিক সিদ্ধান্তসমূহ ও মূল্যায়ন।
সরিষাবাড়ী উপজেলা:
প্রধান সমন্বয়কারী – মোঃ সুমন মিয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), সরিষাবাড়ি উপজেলা
রাজনীতির অন্যতম ভিত্তি হলো নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সুসংগঠিত কাঠামো। যে রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র, অংশগ্রহণ ও জবাবদিহির সংস্কৃতি চর্চা হয়, সেই দলই ভবিষ্যতে জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি’র সদ্য অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ সাধারণ সভা সেই আদর্শিক ভিত্তিকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।
নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতান্ত্রিক রীতি
এই সভায় গৃহীত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন থেকে জাতীয় কাউন্সিলদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের চর্চা কেবল কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবেও প্রতিষ্ঠিত হলো।
সাথে সাথে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার করে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন—এটি একদিকে নেতৃত্বে পুনঃপুনঃ চক্রবৃদ্ধি রোধ করবে, অপরদিকে নতুন ও যোগ্য নেতৃত্ব বিকাশে সহায়ক হবে।
রাজনৈতিক পরিষদ: ভারসাম্য ও জবাবদিহি
সভায় গঠিত ‘রাজনৈতিক পরিষদ’ দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পর্ষদ হিসেবে কাজ করবে। ১১ থেকে ১৫ সদস্যের এই পরিষদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করা হয়েছে—যা একটি সাহসী ও ইতিবাচক পদক্ষেপ।
দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই পরিষদের নিকট দায়বদ্ধ থাকবেন, যা জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব নিশ্চিত করবে।
ন্যাশনাল কাউন্সিল: শীর্ষ নীতিনির্ধারণী ফোরাম
‘ন্যাশনাল কাউন্সিল’-এর মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো নির্ধারণ হবে। কেন্দ্র, জেলা ও উপজেলা কমিটির নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মিলে এই কাউন্সিল গঠিত হবে।
এটি দলীয় কাঠামোর গভীরে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের দৃষ্টান্ত।
সময়োপযোগী কেন্দ্রীয় কমিটি
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ তিন বছর নির্ধারণ এবং মেয়াদ শেষে ৯০ দিনের মধ্যে কাউন্সিল আয়োজনের বাধ্যবাধকতা সুশাসনের একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে। সময়মতো নেতৃত্ব বদলের এই প্রক্রিয়া রাজনীতিতে দায়িত্ব ও শৃঙ্খলার চর্চা প্রতিষ্ঠা করবে।
নিবন্ধনের পথে দৃঢ় পদক্ষেপ
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, এবং এই কাজে প্রতিনিধি দল নির্ধারণ করা হয়। এটি দলের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক স্বীকৃতির পথে এক ঐতিহাসিক অগ্রযাত্রা।
আমার ব্যক্তিগত মূল্যায়ন
এই সভার প্রতিটি সিদ্ধান্তে আমি সময়োপযোগী দূরদর্শিতা, গণতান্ত্রিক প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক পরিপক্বতার ছাপ দেখতে পেয়েছি।
বিশেষত, নেতৃত্ব নির্বাচন ও নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে যেসব নীতি নির্ধারিত হয়েছে, তা আগামী দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে একটি শক্তিশালী, নীতিনিষ্ঠ ও আধুনিক রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত করবে।
এখন সময়—এই গঠনতান্ত্রিক কাঠামোকে বাস্তব রূপ দেওয়ার। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সম্মিলিত প্রয়াস, আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতাই পারবে এই লক্ষ্য অর্জন করতে।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি—
জাতীয় নাগরিক পার্টি হবে গণমানুষের স্বপ্ন পূরনের প্ল্যাটফর্ম। নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব আর জবাবদিহিতা মূলক কাঠামোই এনসিপি’র ভবিষ্যৎ।
Leave a Reply